Trust BD IT

Facebook Marketing Services

ফেসবুক মার্কেটিং কি? কিভাবে করবেন ফেসবুক মার্কেটিং?

সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তনশীল। কার্ড, লিফলেট, পোস্টার, রেডিও টিভিতে বিজ্ঞাপন থেকে আজকের পৃথিবী ডিজিটাল মার্কেটিং এর দিকে ধাবিত হয়েছে। তারাই এগিয়ে থাকে যারা সময়ের চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখে। তেমনি বর্তমান ডিজিটাল পৃথিবীতে ফেসবুক মার্কেটিং বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকা খুবই প্রয়োজনীয় একটি দক্ষতা।

যেকোন ধরণের ছোট-বড় ব্যবসার উন্নতির জন্য বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ফেসবুক মার্কেটিং। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় আটকোটি লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। তারমধ্যে ফেসবুক ব্যবহার করে প্রায় তিনকোটি আশি লাখ। তাই এই সময়ের মার্কেটিং তথা ব্যবসা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অন্যতম মাধ্যম হলো ফেসবুক মার্কেটিং। শুরুর দিকে ফেসবুক মার্কেটিং ধীরগতিতে চালু হলেও বর্তমানে তা ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে।

ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে বর্তমানে প্রচুর ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান সাফল্যের সাথে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। আজকের আলোচনা- ফেসবুক মার্কেটিং কি? ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করা হয়? ফেসবুক মার্কেটিং কেন জরুরী ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে জানার আগে আমাদের ডিজিটাল মার্কের্টিং সম্পর্কে জানতে হবে। অন্যথায় এটা শুধু একমুখী আলোচনা হয়ে থাকবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং/ অনলাইন মার্কেটিং ইন্টারনেট মার্কেটিং যেটাই বলে থাকি, অনলাইন এর মাধ্যমে যেকোন কোম্পানী বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রচার-প্রচারণা, প্রসার ও সর্বোচ্চ পরিমাণে মানুষের সাথে যোগাযোগ এবং পণ্য বিক্রি করার জন্য যে মাধ্যম ব্যবহার করা হয় তাই ডিজিটাল মার্কেটিং। যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, ব্লগ, ইমেল ইত্যাদি।

ফেসবুক মার্কেটিং কি?

ফেসবুক মার্কেটিং হলো এমন একটি যোগাযোগ মাধ্যম যার দ্বারা ব্যবসার পণ্য এবং সেবার ব্যাপারে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে জানান দেয়া হয়ে থাকে। ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে বেশি সংখ্যক লোকের কাছে পণ্য সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয় এবং বেশি পরিমাণ পণ্য বিক্রি নিশ্চিত করা হয়।

ফেসবুক মার্কেটিং কত প্রকার?

ফেসবুক মার্কেটিং সাধারণত ২ প্রকারে হয়ে থাকে। আর তা হলো ফ্রি ফেসবুক মার্কের্টিং এবং পেইড ফেসবুক মার্কের্টিং। ব্যবসার ধরণ অনুযায়ী ফ্রি এবং পেইড ফেসবুক মার্কের্টিং ব্যবহার করা হয়। 

ফ্রি ফেসবুক মার্কের্টিং

সোজা কথায় বলা যায়, যে মার্কেটিং এর কোন পর্যায়ে অর্থ ব্যয় করতে হয় না তাই ফ্রি মার্কেটিং। অনলাইন তথা ডিজিটাল মার্কেটিং এ কোন অর্থব্যয় ছাড়া মার্কেটিং করা যায়। তারই ধারাবহিকতায় ফেসবুক মার্কেটিংও ফ্রি হয়ে থাকে।

সেখানে ব্যবসা বা সেবা প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং হয়ে থাকে। তাই বলা যায়, বিনা অর্থ ব্যয়ে ফেসবুকে যে মার্কেটিং করা হয় তাই ফ্রি ফেসবুক মার্কের্টিং। উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টা আরো সহজ হয়ে যাবে। প্রথমে আমরা একটা ফেসবুক পেজ খুলতে পারি।

প্রতিষ্ঠানের ধরণ অনুযায়ী পেজ এর নাম, কভার পিকচার, প্রোপাইল পিকচার দিয়ে সাজাতে পারি। তারপর যে পণ্য বিক্রি করতে চাই তার পরিপূর্ণ তথ্য দিয়ে পোস্ট দিতে পারি। সেটা ইমেজ আকারেও হতে পারে। অতপর আমাদের পরিচিত সবাইকে এই পেজ ফলো করার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারি।

তারপর ফেসবুক পেজ এর পোস্টগুলো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে পারি। আমাদের পরিচিত ফেসবুক বন্ধুদেরকে শেয়ার দেয়ার জন্য অনুরোধ করতে পারি। এই প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে আমরা অধিক সংখ্যক লোকের কাছে আমাদের পণ্যের প্রচার বাড়াতে পারি কোন ধরণের অর্থ ব্যয় করা ছাড়াই। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ এ যোগদান করে আমাদের পেজ ও পণ্যের পোস্ট দিতে পারি। আর এটাই হলো ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং।

পেইড ফেসবুক মার্কেটিং

সাধারণত ফেসবুক নিউজ ফিডে যে পোস্টগুলো স্পনসরড লেখা থাকে সে সব পোস্টই হলো পেইড ফেসবুক মার্কেটিং। ছোট বড় সকল ব্যবসার প্রতিষ্ঠান এই মার্কেটিং ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত গ্রাহকের কাছে পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারে। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে ফেসবুক এ মার্কেটিং করার নাম হলো পেইড ফেসবুক মার্কেটিং।

পেইড ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে একেবারে সিলেক্টিভ গ্রাহকের কাছে পৌছনো সম্ভব। যদি আমরা চাই আমাদের পণ্য শুধুমাত্র ঢাকা শহরের উত্তরায় বসবাসকারী নারী অথবা পুরুষরা দেখতে পাবে, পেইড ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে এটা সম্ভব।

পেইড ফেসবুক মার্কেটিং এর জন্য ফেসবুক পেজ এবং পোস্টকে প্রমোট করা হয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন আকারে পেজ এবং পোস্ট নির্ধারিত গ্রাহকের কাছে উপস্থাপন করে ফেসবুক।

এটি ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে সম্ভব হয় না। ফেসবুক মার্কেটিং করার নিয়ম প্রত্যেক বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ও ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা দরকার। অন্যথায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল লাভ করা সম্ভব নয়।

তেমনিভাবে ফেসবুক মার্কেটিং থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের উপযোগিতা পেতে ফেসবুক মার্কেটিং এর সঠিক নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। প্রথমেই আপনার ব্যবসায়িক পেজ খুলতে হবে। যাতে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে সবিস্তারে দেয়া থাকবে। যেমন পণ্যের তালিকা, ছবি, কি ধরণের সার্ভিস পাওয়া যাবে, পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে কাস্টমার এর চাহিদা অনুযায়ী কেমন অফার দেয়া হবে ইত্যাদি।

আপনার পেজটি সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। আপনার ব্যবসার সাথে সম্পর্ক রেখে একটা নাম দিতে হবে। ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের লোগো ব্যবহার করে কভার পিকচার দিতে হবে। তেমনি ভাবে প্রোপাইল পিকচার ব্যবহার করতে পারেন।

অতপর আপনার পণ্য অথবা সেবার ব্যাপারে জানিয়ে পোস্ট দিতে হবে। তারপর আপনার পণ্য বা সেবার গ্রাহকের কথা চিন্তা করে আপনাকে ফেসবুক মার্কেটিং শুরু করতে হবে। কোন বয়সের, কোন ধরণের গ্রাহক আপনার পণ্য বা সেবা পেতে আগ্রহী তাদের চিহ্নিত করে আপনার পোস্ট সাজাতে হবে। সেটা লেখা অথবা পিকচারের মাধ্যমে হতে পারে। নিয়মিত আপনার পেজ এ পণ্য বা সেবার ব্যাপারে আপডেট থাকতে হবে। কমেন্ট ও ম্যাসেজ এ গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। যেকোন ধরণের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

ফেসবুক মার্কেটিং টিপস ফেসবুক মার্কেটিং এ ভালো করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস রয়েছে যা ফেসবুক মার্কেটিং টিপস নামে পরিচিত। এই ফেসবুক মার্কেটিং টিপসগুলো সঠিক ভাবে অনুকরণের ফলে আমরা লাভবান হতে পারি। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য স্থির করতে হবে। কোন কিছুই যেন শর্টকাট আকারে না হয়। যেহেতু ব্যবসা একটা চলমান প্রক্রিয়া তাই এর জন্য দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

আপনার সকল প্রকার কনটেন্ট, পোস্ট, ব্র্যান্ড প্রমোশন যাতে লম্বা সময় ধরে আউটপুট দিয়ে থাকে সে অনুযায়ী হতে হবে। ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করতে হবে যার রেশ দীর্ঘদিন ধরে থাকে। কনটেন্ট হচ্ছে যেকোন মার্কেটিং এর প্রাণ এমনভাবে কনটেন্ট বানাতে হবে যাতে পরবর্তী সময়ে পুনরায় পোস্ট দেয়া হলেও গ্রাহকের আগ্রহ আগের মতোই সমানভাবে সক্রিয় থাকে। ফেসবুক মার্কেটিং পুরোটাই আপনি কিভাবে উপস্থাপন করছেন তার উপর নির্ভর করে। আপনার পণ্য বা সেবার মাধ্যমে গ্রাহক কিভাবে উপকার পেতে পারে তার ধারণা দিয়ে ভিডিও ব্যবহার করে পোস্ট দেয়া যেতে পারে। আপনি যদি ফেসবুক মার্কেটিং এ ভালো করতে চান তাহলে আপনার পেজ, পোস্ট, অফার এর ক্ষেত্রে সবসময় ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। এমন যাতে না হয়, এক সপ্তাহে খুব একটিভ কিন্তু পরের দুই সপ্তাহে কোন আপডেট নেই। বিরতি হলে গ্রাহকের আগ্রহ নষ্ট হয়ে যাবে, যা কোন ভাবেই কাম্য হতে পারে না।

মোটকথা আপনার পণ্য বা সেবা গ্রহীতার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে। কোনভাবেই কোন গ্রাহকের প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। গ্রাহকের সকল ধরণের জিজ্ঞাসার ব্যাপারে সক্রিয় থাকতে হবে। তাহলে গ্রাহক আপনার পণ্য তথা সেবা গ্রহণের ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদে আগ্রহী
থাকবে।

উপসংহার

ডিজিটাল মার্কেটিং জগতে ফেসবুক মার্কেটিং খুবই কার্যকরী একটি মাধ্যম। কিছু না করে বসে আছেন মানে আপনি অন্যদের থেকে পিছিয়ে আছেন। তাই দেরি না করে দ্রুত ফেসবুক মার্কেটিং শুরু করুন।

01771-760258